‘সিজদায়ে সাহু’ মানে ভুলের সিজদা। নামাজে কোনো ওয়াজিব ভুলক্রমে ছেড়ে দিলে সিজদায়ে সাহু দিতে হয়। তখন সিজদায়ে সাহু দেওয়া ওয়াজিব। সিজদায়ে সাহুর মাধ্যমে নামাজে পূর্ণতা আনা হয়।

নামাজে কখন সাহু সিজদা দিতে হয়?

♦  নামাজের কোনো ওয়াজিব আমল কেউ ইচ্ছা করে ছেড়ে দিলে, গুনাহগার হবে এবং নামাজও নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ওই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে। তখন সিজদায়ে সাহুর মাধ্যমে, নামাজ পূর্ণ হবে না।

♦ নামাজের কোনো ওয়াজিব কাজ ভুলক্রমে ছুটে গেলে, সিজদায়ে সাহু দেওয়া ওয়াজিব। (বুখারি, হাদিস: ৩৮৬; আবু দাউদ, হাদিস: ৮৭৪; আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস : ৭৮০৮)

♦ ফরজের প্রথম দুই রাকাত বা যেকোনো এক রাকাতে সুরায়ে ফাতিহা পড়তে গেলে অথবা অনুরূপ নফল ও বিতরের যেকোনো রাকাতে ভুলক্রমে সুরায়ে ফাতিহা পড়া না হলে, সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৯৩)

♦ ফরজের প্রথম দুই রাকাতে কেরাত পড়া ভুলে গেলে, শেষ দুই রাকাতে তা পড়ে নেবে। তবে সিজদায়ে সাহু দেবে, নামাজের তারতিব বা ধারাবাহিকতা লঙ্ঘনের কারণে। (মুসলিম, হাদিস : ৮৯৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ১/৪০৯)

♦ ফরজের দুই রাকাত বা এক রাকাতে কিরাত মেলাতে ভুলে গেলে— সাহু সিজদা দিতে হবে। (নাসায়ি: ১২৪৩)

♦ কেউ যদি এক সিজদা করে পরের রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়, তখন ওই রাকাত দুই সিজদা দিয়ে সম্পন্ন করে ছুটে যাওয়া সিজদাও এর সঙ্গে মিলিয়ে নেবে (এক রাকাতে তখন তিন সিজদা হবে)। শেষে সিজদায়ে সাহু করবে, এতে করে নামাজ হয়ে যাবে।

♦ যদি তিন বা চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজে প্রথম বৈঠক ভুলে যায়, তা ফরজ নামাজ হোক বা নফল নামাজ, সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৮৮২)

♦  তাশাহহুদ পড়তে ভুলে গেলে, সাহু সিজদা দিতে হবে। (নাসায়ি, হাদিস : ১২৪৩)

♦ বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে রুকুর আগে কুনুত পড়তে ভুলে গেলে— সাহু সিজদা দিতে হবে। (বায়হাকি, হাদিস : ৪০৪২)

♦ প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদের সঙ্গে দরুদ ইত্যাদি পড়ে ফেলে, তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৯৫)

 

যে সমস্ত কারনে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয় : ১. ফরযকে ( তার স্থান থেকে ) আগে করলে । ২. ফরযকে ( তার স্থান থেকে ) পরে করলে । ৩. ওয়াজিবকে ছেড়ে দিলে । ৪. কোন রোকনকে ( তার স্থান থেকে ) দেরীতে আদায় করলে । ৫. কোন ফরযকে একবারের স্থানে দুইবার আদায় করলে । ৬. কোন ওয়াজিবকে একবারের স্থানে দুইবার আদায় করলে । ৭. কোন ওয়াজিবকে তার স্থান থেকে দেরীতে আদায় করলে । ৮. কোন রোকনকে তার স্থান থেকে আগে আদায় করলে । ( আল মুহিতুল বুরহানি ২ / ৫৬ পৃঃ )

মাসআলা- নামাযের মধ্যে যদি এমন কোন কাজ অতিরিক্ত করে যা নামায জাতীয় কিন্তু নামাযের অন্তর্ভুক্ত নয় , তবে সেক্ষেত্রেও সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে । ( হেদায়া -১ / ১৫৭ পৃঃ )

সাহু সিজদা করবেন যেভাবে

সাহু সিজদার সঠিক নিয়ম হলো, নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়ার পর শুধু ডান দিকে সালাম ফেরাবে। এরপর অন্যান্য সিজদার মতো দুটি সিজদা করবে। তারপর বসে পুনরায় তাশাহ্হুদ, দরুদে ইবরাহিম ও দোয়া মাসুরা পড়ে দুই দিকে সালাম ফেরাবে। এতেই অনিচ্ছাকৃত সেই ভুল কেটে যাবে। নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে না। (ফাতাওয়ায়ে শামি)

কোনো ব্যক্তি যদি ভুলে দুইবার সাহু সিজদা দিয়ে ফেলে। যেমন কেউ নামাজে কোনো ওয়াজিব ছুটে যাওয়ার কারণে সাহু সিজদা দিয়েছি। কিন্তু মনে পরক্ষণে তার মনে হলো যে, সাহু সিজদা দিইনি, এটা ভেবে সে আবার সাহু সিজদা দিয়ে ফেললো। এরপর নামাজের মধ্যেই স্মরণ হলো যে, সেই ভুলে দুইবার সাহু সিজদা দিয়ে ফেলেছে। তাহলে এমন ভুলের কারণে নামাজে কোনো সমস্যা হবে না, তার নামাজ হয়ে যাবে। এই ভুলের কারণে নতুন করে আর নামাজ পড়তে হবে না। (আল বাহরুর রায়েক : ২/১০০, হিন্দিয়া : ১/১৩০, আজিজুল ফাতাওয়া : ২৭০, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৪/১৮৮)

♦ নামাজে ইমামের ভুলের কারণে মুক্তাদিদের ওপরও সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। আর মুক্তাদিরা ইমামের অনুসরণ করা অবস্থায় যদি কোনো ভুল করে, এতে তার সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৪০৫০)

♦ যদি ইমাম সালাম ফেরানোর পর মুক্তাদি তার নামাজ পূর্ণ করতে গিয়ে ভুল করে, তখন তাকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। (নাসায়ি, হাদিস : ১২৪৩)

♦ ইমামের ওপর সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হওয়ার কারণে সিজদায়ে সাহু করার সময় মুক্তাদিকেও ইমামের অনুসরণ করতে হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬৫; সুনানে কুবরা : ৪০৫০)

♦ যে ব্যক্তির ওপর সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়েছে, যদি সে ইচ্ছাকৃতভাবে সিজদায়ে সাহু না করে তাহলে সে গুনাহগার হবে এবং নামাজ আবার পড়তে হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৮৬১; বুখারি, হাদিস : ৬৭৩৭)

♦ যে ব্যক্তির একই নামাজে কয়েকটি ওয়াজিব ভুলক্রমে ছুটে গেছে, সে ক্ষেত্রে একবার সাহু সিজদা দিলেই হবে। (আব্দুর রাজ্জাক : ২/৩২১)

♦ যে ব্যক্তি ভুলক্রমে ফরজ নামাজে প্রথম বৈঠক না করে উঠে যায়, তখন সে যদি পুরোপুরি দাঁড়িয়ে না যায় তাহলে আবার বসে যাবে। যদি দাঁড়ানোর কাছাকাছি উঠে যায়, তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে। যদি বসার কাছাকাছি থাকে, তাহলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৮৭২)

♦ যে ব্যক্তি নফল নামাজে প্রথম বৈঠক না করে উঠে যায়, সে আবার বসে যাবে; যদিও সে পরিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়েই যায়। পরে সাহু সিজদা দেবে। তেমনি যে ব্যক্তি ফরজ নামাজের শেষ বৈঠকের কথা ভুলে গিয়ে দাঁড়িয়ে যায়, সে আবার বসে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সে পঞ্চম রাকাতের সিজদা না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত আবার বসে যাবে এবং সাহু সিজদা দেবে। (মুআত্তা মুহাম্মদ : ১/২২৫; কিতাবুল আসার : ১৮৬)

♦ যদি পঞ্চম রাকাতের সিজদা করে ফেলে, তাহলে তার ফরজ নফল হয়ে যাবে। তখন জোহর, আসর ও এশায় আরো এক রাকাত পড়ে নেবে এবং ফজরেও আরো এক রাকাত পড়ে নেবে, যা নফল হয়ে যাবে। (আবু    দাউদ : ৮৬৪; মুসনাদে আহমাদ ৪০০৬)

♦ যে ব্যক্তি শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ার পর এটিকে প্রথম বৈঠক মনে করে উঠে যায় তাহলে সে আবার বসে গিয়ে সালাম ফিরিয়ে নেবে। আবার তাশাহহুদ পড়বে না। (মুসনাদে আহমাদ : ৪০০৬)

♦ যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে সালাম ফিরিয়ে দেয় অথচ তার ওপর সিজদায়ে সাহু ছিল তাহলে সে ততক্ষণ পর্যন্ত সিজদায়ে সাহু করতে পারে, যতক্ষণ নামাজের বিপরীত কোনো কাজ না করে; যেমন— কিবলা থেকে ফিরে যাওয়া, কথাবার্তা বলা ইত্যাদি। (বুখারি, হাদিস : ১১৫০; আবদুর রাজ্জাক : ২/৩৫০)

♦ যে ব্যক্তি চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ পড়ছিল, সে সালাম ফেরানোর পর মনে পড়ল সে শুধু দুই রাকাতই পড়েছে, তখন নামাজ বেনা করতে পারবে (অর্থাৎ বাকি দুই রাকাত পড়ে নেবে) এবং সিজদায়ে সাহু করবে। (আব্দুর রাজ্জাক : ২/৩১৩)

 

(৩) মনে রাখতে হবে যে-
(ক) ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়া ওয়াজিব। যদি আপনি ফরজ নামাজের ১ম রাকাত বা ২য় রাকাত বা উভয় রাকাতেই সূরা ফাতেহা ভুল করে না পড়েন, তাহলে আপনাকে সিজদায়ে সাহু আদায় করতে হবে। আবার ফরজ নামাজের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়া সুন্নাত। আপনি যদি যে কোনো ফরজ নামাজের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতেহা ভুল করে না পড়েন, তবে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।

(খ) ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সূরা মিলানো ওয়াজিব। যদি আপনি ভুল করে ফরজ নামাজের প্রথম ২ রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোনো সূরা না পড়েন, তাহলে আপনাকে সিজদায়ে সাহু করতে হবে। আবার ফরজ নামাজের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোনো সূরা পড়ার বিধান নেই। তবে আপনি ভুলে ফরজ নামাজের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোনো সূরা পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু করতে হবে না।

(গ) সুন্নাত ও নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাতেই সূরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সূরা মেলানো ওয়াজিব। আপনি যদি যে কোনো সুন্নাত/নফল নামাজের যে কোনো রাকাতে সূরা ফাতেহা বা সূরা ফাতেহার পর অন্য একটি সূরা না পড়েন তাহলে আপনি একটি ওয়াজিব ছেড়ে দিলেন। আপনাকে অবশ্যই সিজদায়ে সাহু করতে হবে।

(ঘ) ভুল করে যে কোনো রাকাতে ২ রুকু বা ৩ সিজদা দিলে সিজদায়ে সাহু করতে হবে।

(ঙ) সূরা ফাতেহা পড়ার পর এখন কী সূরা পড়বো- এ চিন্তায় যদি ৩ তসবীহ পরিমাণ সময় চলে যায় তাহলে সিজদায়ে সাহু করতে হবে। অথবা কোনো সূরার কোনো আয়াত ভুলে গেছেন ওই আয়াত স্মরণ করার জন্য যদি ৩ তাসবীহ পরিমাণ সময় চলে যায় তাহলে সিজদায়ে সাহু করতে হবে। ফরজ ও সুন্নত নামাজের ১ম বৈঠকে যদি ভুলে দুইবার আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ফেলেন তাহলে সিজদায়ে সাহু করতে হবে। আবার ফরজ ও সুন্নত নামাজের ১ম বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর যদি দরুদ শরিফের ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ’ পর্যন্ত পড়ে ফেলেন তাহলে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু করতে হবে। অবশ্য তারচেয়ে কম পড়লে সিজদায়ে সাহু করতে হবে না। তবে নফল নামাজের যে কোনো বৈঠকে দুইবার আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।

(চ) যে কোনো বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার সময় যদি ভুলে সূরা ফাতেহা পড়ে ফেলেন তাহলে সিজদায়ে সাহু করতে হবে। তবে নিয়ত করার সময় সানার পরিবর্তে ভুলে দোয়ায়ে কুনুত পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু করতে হবে না।

(ছ) ৩/৪ রাকাত বিশিষ্ট নামাজে প্রথম বৈঠক ভুলে গেছেন এবং ৩য় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন, যদি অর্ধেকের কম দাঁড়িয়ে থাকেন তাহলে বসে পড়বেন এবং আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ৩য় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন। এ অবস্থায় সিজদায়ে সাহু করতে হবে না।

আর যদি অর্ধেকের বেশি দাঁড়িয়ে যান তাহলে আর বসবেন না। ৩/৪ রাকাত নামাজ শেষ করে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দেবেন।

(জ) যোহর ও এশার ৪র্থ রাকাতে বসতে মনে নেই। একেবারে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে মনে হবার সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়তে হবে। আত্তাহিয়্যাতু ও দুরুদ শরীফ পড়ে সালাম ফেরাবেন। এক্ষেত্রে সিজদায়ে সাহু করতে হবে না।

আর যদি ৫ম রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়ে ফেলেন এবং রুকুও করে ফেলেন তবুও বসে পড়বেন। এ অবস্থায় সিজদায়ে সাহু করতে হবে। আর যদি রুকু করার পরও মনে না হয় তাহলে আরো দুই রাকাত পড়ে মোট ছয় রাকাত পড়বেন। এক্ষেত্রে শেষ দুই রাকাত নফল ও প্রথম চার রাকাত ফরজ হিসেবে আদায় হলো।

কিন্তু আসরের নামাজে ৪র্থ রাকাতে এ রকম ভুল হলে মোট ৬ রাকাতই পড়বেন, কিন্তু পুরো ৬ রাকাতই নফল হিসেবে গণ্য হবে। কারণ আসর নামাজের পর কোনো নফল নামাজ নেই। এক্ষেত্রে আপনাকে পুনরায় আসরের নামাজ পড়তে হবে।

(ঝ) নামাজ ৩ রাকাত পড়েছেন না ৪ রাকাত পড়েছেন- এ রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাহলে এ সন্দেহের কোনো ভিত্তি নেই, একে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। আর যদি হঠাৎ করে এ সন্দেহ হয় তাহলে এ রাকাতকে ৩য় রাকাত ধরে আরেক রাকাত পড়ে নেবেন। আর যদি ৪র্থ রাকাত বলেই মনে প্রবল ধারণা হয় তাহলে আরেক রাকাত পড়ার দরকার নেই। এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।

আবার ১ম রাকাত পড়লেন না ২য় রাকাত পড়লেন এ রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাহলে এ সন্দেহেরও কোনো ভিত্তি নেই। আর যদি হঠাৎ করে এ সন্দেহ হয় তাহলে এ রাকাতকে ১ম রাকাত ধরে আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন। কারণ এটা ২য় রাকাতও হতে পারে। আবার ২য় রাকাতেও আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন। কারণ এটা ২য় রাকাত হতে পারে। আবার ৩য় রাকাতেও আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন। কারণ এটা ৪র্থ রাকাত হতে পারে। তারপর ৪র্থ রাকাতে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফেরাবেন।

(ঞ) নামাজে সালাম ফেরানোর পর যদি নামাজ ৩ রাকাত পড়েছেন, না ৪ রাকাত পড়েছেন এ রকম সন্দেহ সব সময় হয়ে থাকে তাহলে এ সন্দেহের কোনো ভিত্তি নেই। আর যদি স্পষ্টভাবে মনে পড়ে যে, নামাজ ৩ রাকাতই পড়েছেন এবং আপনি এখনো কিবলামুখি হয়ে বসে আছেন এবং কারো সঙ্গে কথাও বলেননি তাহলে সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে আরেক রাকাত পড়ে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফেরাবেন। নামাজ হয়ে যাবে। তবে বেশি দেরী হয়ে গেলে বা কারো সঙ্গে কথা বলে ফেললে অথবা এমন কোনো কাজ করে ফেললে– যা কোনো ব্যক্তি দেখলে মনে করবে যে আপনি নামাজে নেই, তাহলে নামাজ পুনরায় পড়তে হবে।

(ট) একই নামাজে সিজদায়ে সাহু করার একাধিক কারণ ঘটলেও একটি সিজদায়ে সাহু করলেই হবে।

(ঠ) বিতর নামাজে দোয়ায়ে কুনুত না পড়েই রুকুতে চলে গেলে বা দোয়ায়ে কুনুতের পরিবর্তে অন্য কিছু পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু করতে হবে। আর যদি দোয়ায়ে কুনুতের পরিবর্তে অন্য কিছু পড়ে ফেলেন কিন্তু মনে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার দোয়ায়ে কুনুত পড়েছেন তাহলে সিজদায়ে সাহু করতে হবে না।

Views: 141